
দাখিল ৯ম ১০ম শ্রেণীর ফিকহ ও উসূলুল ফিকহ (রোজা পর্ব, كتاب الصوم) গাইড পিডিএফ-Dakhil 9-10 Fiqh and Usulul Fiqh(Roja Porbo)guide PDF
রোজা পর্ব (كتاب الصوم)
রোজার সংজ্ঞা
রোজা হলো দিনের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খাবার, পানি, খারাপ কাজ এবং কিছু নির্দিষ্ট অঙ্গভঙ্গি থেকে বিরত থাকার একটি ইবাদত। রোজা কেবল শারীরিক নয়, এটি আধ্যাত্মিক পরিচ্ছন্নতা অর্জন এবং আল্লাহর নিকট আসার একটি উপায়।
রোজার শর্তসমূহ
- নিয়ত: রোজা রাখার পূর্বে শুদ্ধ নিয়ত করা আবশ্যক। এ নিয়ত রাতের কোনো সময় করা যেতে পারে।
- রোজার সময়: রোজা শুরু হয় ফজরের আগের খাবার (সেহরি) থেকে এবং মাগরিবের সময় ইফতারের মাধ্যমে শেষ হয়।
- পবিত্রতা: রোজা রাখার জন্য একে অপরের শারীরিক ও আধ্যাত্মিকভাবে পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
রোজা রাখার বিধান
রমজান মাসে যেসব মুসলমান রোজা রাখেন, তাদের জন্য রয়েছে কিছু নির্দিষ্ট বিধান:
- রোজা শুরু হয় ফজরের আগের খাবার (সেহরি) থেকে এবং মাগরিবের সময় ইফতারের মাধ্যমে শেষ হয়।
- রোজার দিনগুলোতে পানাহার, যৌন সম্পর্ক, মিথ্যা কথা বলা, অশ্লীলতা, রেগে যাওয়া এবং অন্য সব অপবিত্র কাজ থেকে বিরত থাকতে হয়।
- যে ব্যক্তি সেহরি খায়, তার রোজা পূর্ণ হতে পারে।
রোজা ভঙ্গের কারণ
- খাবার বা পানি খাওয়া
- যৌন সম্পর্ক গঠন করা
- ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা
- এমন কোনো কাজ করা যা রোজার শুদ্ধতার বিপরীত
রোজার উপকারিতা
- আধ্যাত্মিক পরিস্কারতা: রোজা মনুষ্যত্ব এবং আত্মার পরিশুদ্ধি বৃদ্ধি করে।
- সামাজিক সংহতি: রোজা অভাবী ও দরিদ্রদের সহানুভূতি উপলব্ধি এবং তাদের সাহায্য করার একটি সুযোগ দেয়।
- অধ্যাত্মিক প্রশান্তি: রোজা আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ও ভক্তির মানসিকতা গড়ে তোলে।
রোজার হাদিস
রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন:
"যে ব্যক্তি রমজান মাসের রোজা রাখে, তার অতীত গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।"– সহিহ মুসলিম
আল্লাহ তাআলা বলেন:
"হে বিশ্বাসীগণ, তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমনটা তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরজ করা হয়েছিল, যাতে তোমরা সতর্ক থাকো।"– সূরা বাকারা: ১৮৩
রোজার প্রকার
- ফরজ রোজা: এটি রমজান মাসের রোজা, যা সমস্ত মুসলমানের উপর ফরজ।
- নফল রোজা: এটি অতিরিক্ত রোজা, যা ইচ্ছাকৃতভাবে রাখা যেতে পারে। যেমন: শাবান মাসের রোজা, সোম-বৃহস্পতিবারের রোজা ইত্যাদি।
- কফফারা রোজা: ভুলবশত রোজা ভঙ্গ করলে, কফফারা বা শাস্তি হিসেবে অতিরিক্ত রোজা রাখা হয়।
উপসংহার
রোজা ইসলামিক জীবনে এক পবিত্র ইবাদত হিসেবে পালন করা হয় যা মানুষকে আল্লাহর নিকট কাছাকাছি নিয়ে যায় এবং শারীরিক ও আধ্যাত্মিক প্রশান্তি লাভে সহায়তা করে। রোজার মাধ্যমে একজন মুসলমান তার আধ্যাত্মিক শক্তি বাড়ায় এবং সমাজে অসহায় ও দরিদ্রদের সাহায্য করার জন্য সহানুভূতিশীল হয়।