জুমার দিনের ফজিলত

Sayemul Kabir
0
Join Telegram for More Books

জুমার দিনের ফজিলতঃ

জুমার দিনের মার্যাদা অসংখ্য। আল্লামা ইবনুল কাইয়ুম (রহঃ) তাঁর কিতাবে পবিত্র জুমার দিনের ১২০টি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন।এ সম্পর্কে অসংখ্য হাদীস শরীফ রয়েছে। নিম্নে কয়েকটি উল্লেখ করা হল- قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ خَيْرُ يَوْمٍ طَلَعَتْ عَلَيْهِ الشَّمْسُ يَوْمُ الْجُمُعَةِ فِيْهِ خُلِقَ آدَمَ وَفِيهِ أُدْخِلَ الْجَنَّةَ وَفِيهِ أُخْرِجَ (د) منها - (مسلم ٢ / ٥٨٥) অর্থাৎ- রাসুল (সঃ) বলেন, সুর্যের নিচে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হল জুমার দিন। এই দিনে আল্লাহ আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করেন, এই দিনেই তাকে জান্নাতে  থেকে বের করা হয়। (মুসলিম) ২/২৮৫) قَالَ إِنَّ يَوْمَ الْجُمُعَةِ سَيِّدُ الْأَيَّامِ وَأَعْظَمُهَا عَنْدَ اللَّهِ وَهُوَ أَعَظَمُ عِنْدَ اللَّهْمْ مِنْدَ اللَّهِ وَيَوْمِ الْفِطْرِ فِيْهِ (2) خَمْسُ خِلَالٍ خَلَقَ اللَّهُ فِيهِ آدَمَ وَأَهْبَطَ اللَّهُ فِيْهِ آدَمَ إِلَى الْأَرْضِ وَفَيْمَ اللَّهُ فِيْهِ آدَمَ إِلَى الْأَرْضِ وَفَيْفَي وَفِيْهِ سَاعَةً لَا يَسْأَلُ اللَّهَ فِيهَا الْعَبْدُ شَيْئًا إِلَّا أَعْطَاهُ مَا لَمْ يَسْأَلْ مَا لَمْ يَسْأَلْ مَرَامًا وَفِيهِ تَقُوَاْمِنْ مِنْةُ مَلَكٍ مُقَرِّبٍ وَلَا سَمَاءٍ وَلَا أَرْضٍ وَلَا رِيَاحٍ وَلَا جِبَالٍ وَلَا بَحْرٍ إِلَّا وَهُنَّ يُشْفِقْنَ مِنْعُمِنْ الْمِنْة, রাসুল (সঃ) বলেন-সকল দিনের সর্দার ও আল্লাহর নিকট সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ দিন হল জুমুআর দিন। এই দিনটি আল্লাহর নিকট ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতরের দিনের চেয়ে বেশী মার্যাদাময়। এই দিনের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে:-(ক) এই দিনে আল্লাহ আদমকে সৃষ্টি করেন (খ) এই দিনে আদমকে পৃথিবীতে অবতরণ করান (গ) এই দিনেই আল্লাহ আদমকে মৃত্যু দান করেন (ঘ) এই দিনেএমন একটি সময় আছে, তখন বান্দাহ আল্লাহর নিকট যা চাইবে আল্লাহ তাকে তাই দান করবেন যদি না সে কোন হারাম বস্তু চায় (ঙ) এই দিনেই কিয়ামত সংঘটিত হবে,-সকল নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেস্তা, আকাশ, জমিন, বাতাস, পাহাড়, সমুদ্র প্রত্যেকেই এই জুমাবারে (কিয়ামতের ভয়ে) সন্ত্রস্থ হয়ে পড়ে (ইবনে মাজাহ ১/৩৪৪)

  

ফজিলতের আলোচনায় উল্লেখিত দ্বিতীয় হাদীসটির কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংক্ষেপে পর্যালোচনা দরকার। (এক) হাদীস শরীফ থেকে জানা গেল যে, জুমার দিনটি বেশি দামী। এমনকি মুসলমানদের বাৎসরিক দুটি খুশির দিন ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা থেকেও বেশী। বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, পূর্ণ একমাস সিয়াম সাধনার পর ঈদুল ফিতর হল পুরষ্কারের দিন এবং ঈদুল আযহা আল্লাহকে খুশি করার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের দিন। কত বড় দুইটি দিন, জুমাবার এর চেয়েও দামী। বাকী থাকে অন্য একটি বড় দিন, তাহল জিলহজ্বের ৯ তারিখ তথা আরফাতের দিন। সমগ্র দুনিয়ার মুসলমানদের মিলন মেলা হজ্বের দিন। হজ্বের মূল কাজ এই দিনে আরফাতের ময়দানে অবস্থান করা। এই অবস্থান কোন হাজী ছেড়ে দিয়ে বাকী সকল কাজ করলেও হজ্ব হবেনা । এই দিনটি এত গুরুত্বপূর্ণ যে, এর দুইটি রাত রয়েছে। এর আগের রাত ও পরের রাত। দশ তারিখের দিনের কোন রাত নেই। এই দিন সব হাজীর গুনাহ মাফ হয়ে পরিস্কার হয়ে যায়। এই আরফাতের দিন বেশী দামী নাকি জুমার দিন বেশী দামী তা নির্ণয়ে ইমামদের মধ্যে বাদানুবাদ দেখা যায়। ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এবং ইমাম শাফেয়ী (রহ) এর একটি মন্তব্য হল আরফাতের দিন বড়। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ) এর একটি মন্তব্য হল আরফাতের দিন বড়। কিন্ত ইমাম আহমদ ইবনে (রহ) হাম্বল (রহ) এবং ইবনুল আরবী মনে করেন জুমার দিন আরফাতের দিনের চেয়েও দামী। এই দিনের শ্রেষ্টত্বের কিছু নিদর্শনও বর্ণিত হয়েছে উক্ত হাদীস শরীফে। এই দিন সৃষ্টির শেষ হয়। সাভাবিক ভাবেই গুরুত্বপূর্ণ দিনে কোন কিছুর ইতি টানা হয়।

(দুই) এই দিনের মধ্যে এমন একটি সময় আছে যে সময়ে বান্দাহ নিষিদ্ধ কোন কিছু না চাইলে, অনুমোদিত যা কিছু চাইবে আল্লাহ পাক ফেরত দিবেন না। বোখারী ও মুসলিম শরীফে আরও একটি হাদিস হযরত আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূল (সঃ) এরশাদ إِنَّ فِي الْجُمْعَةِ لَسَاعَةً لَا وَافِقُهَا عَبْدُ مُسْلِمٌ يَسْأَلُ اللَّهَ فِيهَا خَيْرًا إِلَّا أَعْطَاهُ إِيَّاهُ - অথাৎ-জুমার দিন এমন একটি মুহুর্ত আছে-যদি কোন মুমিন তাতে কল্যাণকর কিছু চায় আল্লাহ তাকে অবশ্যই দান করেন। (মিশকাত-১৯) ইমাম জাযরী (রহঃ) বলেনঃ কোরআন হাদীসের দোয়া কবুলের যে সমস্ত সময়ের কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে জুমার দিনের সময়টি বেশী গুরুত্বপূর্ণ এবং কবুলের সম্ভাবনা বেশী। এই মুহুর্তটি খুবই লুকায়িত। নির্ণয় করতে গিয়ে গবেষক বুজর্গানে দ্বীন গলদঘর্ম করেছেন। মুসলিম শরীফের বর্ণনায় আছে যে ইহা অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়। ইবনে হিববান এবং হাকিম বর্ণনা করেন জুমার দিনের ১২ ঘন্টার মধ্যে যে কোন সময় হতে পারে। মযাহের গ্রন্থকার এক্ষেত্রে ৩৫টি মতামত উল্লেখ করেছেন। আল্লামা সুয়ূতী (রহঃ) এক্ষেত্রে ৪৫টি মতামত উল্লেখ করেন। আর আনোয়ার শাহ কাশমিরী (রহঃ) ৫০টি মতামত উল্লেখ করেন। অনেকে এভাবেই বলেন-শবে কদর যেমন লুকায়িত ইহাও তেমন লুকায়িত। কেউ কেউ বলেন, সময়টি ইসমে আজমের মত অস্পষ্ট। নিম্নে কিছু মতামত ব্যক্ত করা হল -

(১) ফজর উদয় হওয়ার পর থেকে সূর্য উদয় পর্যন্ত। হযরত আবু হুরায়রা (রঃ) এর রেওয়ায়েত থেকে এর সমর্থন পাওয়া যায়। (২) হয়রত হাছন বসরী ও আবুল আলিয়া (রহ) বলেন এই সময় জুমার দিন সূর্য ঢলে পড়ার সময় (৩) হয়রত আয়েশা (রঃ) বলেন মুয়াজ্জিন জুমার নামাযের আজান দেয়ার সময় হল দোয়া কবুলের সময় (৪) হযরত হাসন বসরী (রহঃ) এর অপর এক মতে খতীব সাহেব মিম্বরে উঠার পর থেকে খোৎবা থেকে অবসর হওয়া পর্যন্ত।

(৫) মুসলিম শরীফের এক রেওয়ায়াত মতে খতীব মিম্বরে উঠার পর থেকে নামাজ শেষ করা পযন্ত (৬) হযরত আবু বুরদাহ (রহঃ) মতে জুমার নামায়ের ওয়াক্তই দোয়া কবুলের সময় (৭) আবু সুয়ার আলআদভী (রহঃ) বলেন সূর্য ঢলে পড়ার পর থেকে নামাজ শেষ করা পর্যন্ত এই সময় থাকে (৮) হযরত আবু যর (রঃ) বলেন সূর্য উঠার পর থেকে এক বাঁশ দুই বাঁশ উপরে উঠা পর্যন্ত (৯) আসর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। হযরত আবু হুরায়রা (রঃ) এর একটি মত এবং হযরত আতাও আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম এ মত ব্যক্ত করেন (১০) ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল, অধিকাংশ প্রসিদ্ধ সাহাবা ও তাবেয়ীগন মনে করেন-আসরের পর থেকে দিনের শেষ ভাগ (১১) ইমাম নববী (রহ) বলেন নামাযের জন্য ইমাম বের হওয়ার পর থেকে নামায শেষ করা পর্যন্ত (১২) হযরত কাব (রঃ) বলেন দিনের তৃতীয় ভাগে এই সময়টি হতে পারে। এখানে আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়টির উপর বেশী জোর দিয়েছেন। হযরত ইমাম আবু হানিফা (রঃ) হযরত আবু হুরায়রা (রঃ) এবং হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রঃ) থেকে পরিস্কার হাদীস বর্ণনা করেন এ বিষয়ে। অন্যদিকে ইমাম সাহেব মিম্বরে উঠা থেকে নামায শেষ করা পর্যন্ত সময়টি মুসলিম শরীফের হাদীস থেকে বেশী প্রমানিত, আল্লাহপাক বেশী ভাল জানেন। এখানে আসল কথা হল, মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাহদেরকে সময়টি লুকিয়ে রেখে মহিমাময় দিনটির পূর্ণ সময়টার মধ্যে এই গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্তটি তালাশ করতে দিয়ে পুরা দিনের বরকত লাভের ব্যবস্থা করেছেন। যেমন শবে কদর লুকিয়ে রেখে পূর্ণ রমজান বিশেষ করে শেষ দশ দিনে তালাশ করতে বলে পূর্ণ সময়টা এবাদতে কাটাবার জন্য উৎসাহিত করেছেন। আল্লাহর ইচ্ছা যেন বান্দা শুধু এই অল্প সময় এবাদত করে গাফেল হয়ে বাকী সময়ের বরকত থেকে মাহরুম না হয়। দোয়া কবুলের সময় তালাশ করতে গিয়ে যেন পুরা দিনটিকে এবাদতে কাটায়। কারণ পূর্ণ দিনটিই বড় দিন ।

(তিন) হাদীসটির শেষ অংশে দেখা যায়-জুমাবার আসলে ফেরেস্তাসহ আল্লাহর সকল সৃষ্টি কিয়ামত হয়ে যাওয়ার ভয়ে ভীত হয়ে যায়। যেহেতু এই দিনেই কিয়ামতের ফুৎকার দেয়া হবে। আবু দাউদ, তিরমিযী শরীফে উল্লেখিত আর একটি হাদীস এখানে উল্লেখ করছি।-রাসূল (সাঃ)- مَا مِنْ دَابَّةٍ إِلَّا وَهِيَ مُصِيْحَةٌ يَوْمَ الْجُمْعَةِ مِنْ حِيْنِ تُصْبِحُ حَتَّىتَطْلَعَ الشَّمْسُ شَفَقًا مِنَ السَّاعَةِ إِلَّا الْجِنُّ وَالْإِنْسُ -অর্থাৎ-“কিয়ামত কায়েম হওয়ার ভয়ে জুমার দিন ভোর হতে সুর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত সকল প্রাণীই চিৎকার করতে থাকে। একমাত্র জ্বিন ও মানুষ ব্যতিত”।সম্মানিত পাঠক একটু লক্ষ্য করুন, মানুষ এবং জ্বিন ছাড়া সকল সৃষ্টি জুমার দিন কিয়ামত হবে বলেই সারাদিন কিয়ামত হয়ে যাচ্ছে নাকি এ ভয়ে ভীত থাকে। অথচ এদের জন্য জন্নাত-জাহান্নাম কিছুই নেই। যাদের জন্য আছে তারা খেলা-ধুলা, হাসি-ঠাট্টা, গল্প-গুজবে, আনন্দ-ফুর্তিতে সময় নষ্ট করে। বড়ই আফসোস! يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِيَ لِلصَّلَاةِ مِنْ يَوْمِ الْجُمْعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُو الْبَيْعَ ذَالِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ - “মুমিনগণ জুমুআর দিনে নামাযের আজান দেওয়া হবে।তোমরা আল্লাহর জিকিরের জন্য ত্বরা কর এবং বেচাকেনা ছেড়ে দাও। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা বুঝ”। (সূরা জুমা) আয়াতের অর্থ হল-জুমার দিন আজান দিলে ব্যবসা সহ সবকাজ ছেড়ে নামায ও খোৎবার জন্য তাড়াতড়ি কর। আয়াতের ইঙ্গিতে এটাও বুঝা যায় যে, জুমার আযানের পর বেচা-কেনা হারাম। এই আদেশ ক্রেতা-বিক্রেতা উভয় পক্ষের জন্য। আয়াতে নামাযের জন্য দৌড় দিতে বলা হয়েছে। অবশ্য এখানে উদ্দেশ্য নামাযের প্রতি গভীর মনোনিবেশ করা। কারণ নামাযের জন্য দৌঁড়তে অন্য হাদীসে নিষেধ আছে। বরং ধীরস্থির ভাবেই যেতে বলা হয়েছে।

আযানের সাথে সাথে মসজিদের দিকে চলে যেতে হবে। আয়াতে রাসুল (সঃ) কে একথা বলে দিতে আদেশ করা হয়েছে যে, আল্লাহর কাছে যে সওয়াব আছে, তা বেশী দামী। যারা এই বাণিজ্য ছেড়ে দেয়, তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে দুনিয়াতে বিশেষ বরকত নাযিল হবে। অবশ্য একটি কথার ফাঁক থেকে যায় যে, রাসুল (সঃ) এর যুগে জুমআর মাত্র একটি আজান দেয়া হত। পরবর্তীতে লোক বাড়লে হযরত ওসমানের আমলে অথবা হযরত ওমরের আমলে দুই আজান চালু করা হয়। এর উপর উম্মতের এজমা হয়েছে। কোন আজানের পর কাজকাম হারাম তা নিয়ে ওলমায়ে কেরামের মধ্যে মতবিরোধ আছে। অধিকাংশই খোৎবার আজানের পক্ষে মত দিয়েছেন। কিন্তু যাই হোক এমন দিনের ফজিলত ও দোয়া কবুলের গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্ত হাত ছাড়া হওয়া চরম হতভাগার কপাল ছাড়া বৈ কিছু নয়। বরকত লাভের জন্য অগ্রিম প্রস্তুতি জরুরী। এজন্য খোদা প্রেমিকগণ আগের দিন থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। যারা জুমাবারকে আমাদের দেশে ছুটির দিন নির্ধারণ করতে কাজ করেছেন এবং সমর্থনও সহযোগীতা করেছেন তাদেরকে আল্লাহ পাক উত্তম পুরষ্কার দান করুন। তাঁরা মুসলমানদের কলিজা থেকে দোয়া পাওয়ার উপযুক্ত। কিন্তু আফসোসেরও কিছু কারণ আছে-তাহল-বন্ধ পেয়ে এবাদতের দিকে সুযোগটা কাজে না লাগিয়ে অনেকেই তা অবহেলায় নষ্ট করি। বরং ইহুদীদের বড়দিন যেহেতু শনিবার তাই আমাদের পবিত্র বড় দিনে টেলিভিশন সহ গনমাধ্যম গুলোতে আকষর্ণীয় সিনেমাও অন্যান্য প্রোগ্রামের ব্যবস্থা করে তরুন সমাজকে সেখানে আটকে রেখে এবাদতের সময় নষ্ট করতে তৎপরতা চালায়। এমনকি আন্তর্জাতিক ব্যবসার অজুহাতে পবিত্র জুমাবারের পরিবর্তে রবিবারকে ছুটির দিন ঘোষণার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে তৎপরতা লক্ষ্য করা হচ্ছে ইদানিংকালে।

খৃষ্টানরাতো এদাবী করবেই। কিন্তু আমাদের মুসলিম ভাইরা যদি পূর্বোক্ত আলোচনা টুকুর মর্মার্থ একটু করে হলেও অনুধাবন করতেন, তাদের জন্যই কল্যাণ বয়ে আনত নিঃসন্দেহে। হেদায়তের মালিক আল্লাহ। জুমুআর দিনের ফজিলত সম্পর্কে অনেক গুলো হাদীস শরীফ বাদ দিলেও একটি হাদীস উল্লেখ করতে আগ্রহ সামলানো যচ্ছে না তাহল- রাসুল (সঃ) বলেন- عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمَرٍو رَضِيَ اللَّهُ تَعَالَى قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللَّهِ لَهُ مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَمُوْتُ يَوْمِعْمِ أَوْلَيْلَةَ الْجُمْعَةِ إِلَّا وَقَاهُ اللَّهُ فِتْنَةَ الْقَبَرِ ( احمد - ترمذی)হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) বর্ণিত, তিনি বলেন রাসুল (সঃ) বলেছেন, কোন মুসলমান জুমার দিনে বা জুমার রাতে মারা গেলে আল্লাহ তাকে কবরের ফিত্না থেকে রক্ষা করেন। (আহমদ, তিরমিযি, মিশকাত পৃ-১২১) অপর একটি বর্ণনায় রয়েছে যে, কেউ জুমুআর দিন মৃত্যুবরণ করলে তাকে কবরের আজাব থেকে নিষ্কৃতি দেওয়া হয়। এবং কিয়ামতের দিন সে এমতাবস্থায় উত্থিত হবে যে, তার উপর শহীদের মহর থাকবে। এখানে উল্লেখ্য যে, এ ফজিলত কেবল তিনিই লাভ করবেন যিনি কাজে কর্মে প্রকৃত মুসলমান। অন্যথায় হঠাৎ করে বড় কোন পাপী যদি কোন কারণে জুমার দিন মারা যায় সে সোজা বেহেস্তে চলে যাবে এমন কোন গ্যারান্টি এখানে দেওয়া হয়নি। আর কবরের আজাব হতে নিস্কৃতির অর্থ-কবরে তার হিসাব হবে না। হাশরের দিন পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। হাশরের দিনও যে হিসাব হবে না এটা নয়। আল্লাহ চাইলে তাকে একেবারেই মাফ করে দিতে পারেন। আল্লাহ পাকই বেশী ভাল জানেন। আমরা আল্লাহর কাছে চাই যেন, প্রকৃত ঈমান নিয়ে জুমাবার দিন শেষ নিঃশাস ত্যাগের অন্তত এই ফজিলতটুকু লাভ করি।

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Ok, Go it!